মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২৫

২৯ মাঘ ১৪৩১

leading admission leading admission
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২৫
২৯ মাঘ ১৪৩১
সরকারি রেজিস্ট্রেশন নম্বর- ১৮২
আপনি পড়ছেন : জাতীয়

 বিধবা মা ও পিতৃহীন সন্তানদের উপর  সন্ত্রাসী হামলা


মো: সগীর মাহমুদ -ইসময় (চট্টগ্রাম )
2022-01-01
 বিধবা মা ও পিতৃহীন সন্তানদের উপর  সন্ত্রাসী হামলা
সন্ত্রাসীরা হাসান বানুকে মারাক্তকভাবে  মাথায় আঘাত করে।মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন।

সন্ত্রাসীরা হাসান বানুকে মারাক্তকভাবে  মাথায় আঘাত করে।মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন।



 চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে জায়গা জমিন ও বসতভিটা উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে  বড়উঠান ইউনিয়ন শাহমিরপুর গ্রামে লিচুতলায় সাজেদার বাপের বাড়িতে হাসান বানু (৫০) নামে এক মধ্যবয়স্ক মহিলা ও তার সন্তানদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করেছে।

 

 

 


 ঘটনাটা সংঘটিত হয় শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল আনুমানিক আটটার দিকে। সন্ত্রাসীরা হাসান বানু ও তাদের সন্তানকে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। হামলায় হাসান বানু গুরুতরভাবে আহত হয়। এই সময় হামলাকারীরা আহত হাসান বানুর ঘরের দরজা, গবাদি পশু রাখার ঘর এবং একটি ছাগলের পায়ে গুরুতর ভাবে আঘাত করেছে বলে জানা যায়।

 

 

 

ঘটনায় ইট পাথর ঘরের মধ্যে ছুঁড়ে মারার মত দৃশ্যরও প্রমাণ দেখা গেছে। হাসান বানু বিবাহের পর শ্বশুরবাড়িতে তার শশুরের পৈতৃক মাটির তৈরি ঘরে উঠেছিলেন নববধূ হয় সেই ৩০ বছর আগে। গত ৪ বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে বিধবা হাসান বানু তিন ছেলে সন্তান কে নিয়ে স্বামীর পৈত্রিক ভিটা আঁকড়ে ধরে আছেন। স্বামীর পৈত্রিক ভিটা সম্পূর্ণ জায়গা স্বামীর অন্য ভাই বা চাচাতো ভাইদের মধ্যে সম্পত্তি বন্টনের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক সালিশ হলেও তা মীমাংসা হয়নি। মাটির ঘর হওয়াতে তায় সংস্কার করা অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে।

 

 

 

ঘর সংস্কার এর উদ্দেশ্যে গত চার মাস ধরে একটু একটু করে কাজ করে যাচ্ছিলেন হাসান বানু ও তার এতিম সন্তানরা। অভাব-অনটনের সংসার কাজের গতিও অতি সামান্য তারমধ্যে প্রতিপক্ষদের নানাবিধি বাধা ঝগড়া-বিবাদ সবগুলো মিলিয়ে হয়ে উঠছে না কোন কিছুই। হঠাৎ করে শুক্রবারে প্রতিপক্ষ তাদের ৪/৫ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ভোরবেলা আক্রমণ করে বসে ঘুমন্ত হাসান বানু ও তার ছেলেদের উপর।

 

 

 

কোন কিছুই বুঝে উঠার আগেই মধ্যবয়স্ক এই হাসান বানুকে মাথায় আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা। তার ছেলেদেরকে বেদম মারধর করতে থাকে। সবচেয়ে ছোট যে ছেলেটিকে দৌড়াতে দৌড়াতে এলাকার বাইরে নিয়ে যায় এবং সেই ছেলেটি এখনো বাসায় ফিরে আসেনি বলে জানানো হয় গণমাধ্যমকর্মীদের কে। আহত বিধবা হাসান বানু বলেন, "স্বামী হারিয়ে আমি আমার সন্তানদের নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। আমার বড় ছেলেটি একটু মানসিক প্রতিবন্ধী,  একটা গার্মেন্টসে কাজ করে অনেক কষ্টে সংসার চালাচ্ছে।

 

 

 

 

বাকি দুইটা ছেলে এখনো পড়াশোনায় আছে। আমার এই মাটির ঘরটি আমার স্বামীর স্মৃতি। এই ঘরে আমি নব বধু হয়ে এসেছিলাম। আমার সন্তানদেরকে নিয়ে এই ঘরে অনেক সুখ দুঃখ বসবাস করে আসছি। আমাদের প্রতিপক্ষরা বসতভিটা থেকে আমাদেরকে বের করে দিতে নানাবিধ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এখন সন্ত্রাসী হামলা করে আমাদেরকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে।

 

 

 

 

সকালে আমাকে মেরে আহত করে 'রিকি ও বিকি নামে দুইটা ছেলে বলছিল এক গুলিতে ৫ জনকে মেরে ফেলবো।' আমি এখন আমার সন্তানদেরকে নিয়ে জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। আমরা অসহায় বলে এলাকাবাসী ও আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অনেক সময়ই। প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকাতে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন কার কাছে যাবো? কোথায় গেলে বিচার পাব ?" বিধবা হাসান বানু কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এই হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন করেছেন।

 

 

 

 

এই বিষয়ে কর্ণফুলী থানাধীন শাহমিরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আল মাহমুদের সাথে কথা বলে জানা যায়, "হামলার ঘটনার খবর পেয়ে আমি দ্রুত সেখানে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে দিয়েছি। আহত অবস্থায় হাসান বানুকে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য মেডিকেলে পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা নিতে পারিনি। ভুক্তভোগী হাসান বানু সুস্থ হয়ে ফিরলে উনি যদি মামলা করেন সেক্ষেত্রে আমরা অ্যাকশনে যেতে পারবো। গণমাধ্যমকর্মীকে আশ্বস্ত করে বলেন ঘটনায় যে বা যারা জড়িত থাকুক না কেন তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।