সোমবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৪

২৯ আশ্বিন ১৪৩১

leading admission leading admission
সোমবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৪
২৯ আশ্বিন ১৪৩১
সরকারি রেজিস্ট্রেশন নম্বর- ১৮২
আপনি পড়ছেন : জাতীয়

আশুলিয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ-গুলি, নিহত ১


ডেস্ক রিপোর্ট
2024-09-30
আশুলিয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ-গুলি, নিহত ১
ছবি: বিডি নিউজ

সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের সময় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জিরাবো এলাকার মণ্ডল গ্রুপের কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে সাভার থানার ওসি জুয়েল জানান।

নিহত ওই শ্রমিকের নাম কাউসার হোসেন খাঁন। তিনি টঙ্গাবাড়ি এলাকার ম্যাংগো টেক্স লিমিটেডের সুইং অপারেটর ছিলেন।

কাউসারের মরদেহ সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এনামুল হক মিয়া বলেন, “একজন শ্রমিককে বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার পেটের বাম পাশে গুলি লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ আরও দুইজন চিকিৎসাধীন।”

গুলিবিদ্ধ শ্রমিকরা হলেন- টঙ্গাবাড়ি জিরাবো এলার ন্যাচারাল গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিক রাসেল মিয়া ও নয়ন।

এদিকে পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত পাঁচটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

আহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- আশুলিয়ার ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক হাবীব ও ন্যাচারাল ইন্ডিগো কারখানার শ্রমিক নাজমুল হাসান। বাকিদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানায়, সকালে মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষ, শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠক চলছিল। সমঝোতা না হওয়ায় শ্রমিকরা কারখানার বাইরে অবস্থান নেয়।

পরে অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা সেখানে জড়ো হতে থাকে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। তখন উত্তেজিত ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা র‍্যাব ও পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।

একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লাঠিপেটা শুরু করলে অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়।

শ্রমিকদের অভিযোগ, পরে শ্রমিকরা আরও উত্তেজিত হলে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায়। এ সময় দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়।

ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক মো. সুমন মিয়া বলেন, “সকালে আমাদের কারখানায় সবাই কাজ করছিলো। কোনো ধরনের আন্দোলন হয়নি। তবে মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকরা কারখানার সামনে আন্দোলন শুরু করলে আমাদের শ্রমিকরা ‘সংহতি জানিয়ে’ সামনে যায়। সেখানে আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা যোগ দেয়।

“এ সময় শ্রমিকদের লাঠিচার্জ শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এক পর্যায়ে গুলি ছুড়লে দুই জনের পায়ে গুলি লাগে। পরে আমি তাদের দুইজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এ ছাড়া আরও অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল চিকিৎসা নিচ্ছেন।”

পিএমকে হাসপাতালের ব‍্যবস্থাপক (প্রশাসন) নাজিম উদ্দিন বলেন, “আমাদের হাসপাতালে চারজন শ্রমিককে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই জনের পায়ে গুলি লেগেছে। চিকিৎসা চলছে।”

ন্যাচারাল ডেনিমস কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা (এইচআর অ্যাডমিন) সবুজ হাওলাদার বলেন, “আমাদের কারখানায় কোনো সমস্যা ছিলো না। সকাল থেকেই শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছিলো। হঠাৎ শ্রমিকদের কাছে গুজব আসে, পাশের মণ্ডল গার্মেন্টসের শ্রমিক মারা গেছে। এটা শুনেই সব শ্রমিক একসঙ্গে কারখানা থেকে বেরিয়ে মণ্ডল গার্মেন্টসের সামনে চলে যায়। পরে ওখানে কী ঘটেছে আমার জানা নেই।”

নিহতরা পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন কি-না জানতে চাইলে সাভার থানার ওসি জুয়েল বলেন, “তাদের মৃত্যু গুলিতে না কিভাবে হয়েছে, সে বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই।”

সূত্র: বিডি নিউজ