সিলেটে রামু ট্রাজেডি এক যুগকে স্মরণ করে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন রবিবার ( ২৯ সেপ্টেম্বর) বৌদ্ধ যুব পরিষদ সিলেট অঞ্চল আয়োজন করে। এতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ,সংগঠক, সাংবাদিক উৎফল বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ সিলেট অঞ্চলের সভাপতি লিটন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ সিলেট অঞ্চল সিনিয়র সহসভাপতি তপতি বড়ুয়া, রমা বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক দিলু বড়ুয়া, অর্থ সম্পাদক সেবু বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুমন বড়ুয়া, শেলু বড়ুয়া, সেতু বড়ুয়া,টিনা বড়ুয়া, অয়ন বড়ুয়া, সীমান্ত বড়ুয়া জয়, সেতু বড়ুয়া মুক্তা,আপন বড়ুয়া হিমেল বড়ুয়া, অবন্তী বড়ুয়া প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রিয় মাতৃভূমি অশান্ত হয়ে উঠেছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, পাহাড় থেকে সমতল কোথাও যেন শান্তির সুবাতাস নেই। সাম্প্রদায়িক উসকানির দাবানলে পুড়ে ছারখার হচ্ছে সম্প্রীতির বাংলাদেশ। একের পর এক হামলায় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলেছে। শান্তির প্রত্যাশায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে সর্বত্যাগী বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরাও। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ঘটে যাওয়া রামুর ক্ষত এখনো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মন থেকে মোছেনি। আজ সেই স্মরণকালের ভয়ার্ত দিন। ভয়াবহ ঘটনার এক যুগ। ১২ বছরে মামলার নিষ্পত্তির কথা বাদ, তদন্তই এগোয়নি। বিচার প্রক্রিয়ার গতি নেই। পবিত্র কুরআন অবমাননার মিথ্যা অজুহাত তুলে সেদিন রামু, এরপর উখিয়া, পটিয়াসহ অন্তত ১৫টি বৌদ্ধ বিহার ও ৪০টিরও অধিক বৌদ্ধ জনবসতিতে হামলা, লুটপাট, আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে ইতিহাসের অনন্য গুরুত্বপূর্ণ দলিল, উপাসনালয়, বিহার ও বৌদ্ধ স্থাপনা। ‘৬০০ থেকে ১১০০ শতকে নির্মিত কাঠ, পাথর, স্বর্ণ ও ধাতুর তৈরি চার শতাধিক অবিস্মরণীয় বৌদ্ধমূর্তিকে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়। ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে বৌদ্ধ শিল্পকলায় নির্মিত কেন্দ্রীয় সীমা বিহার ভস্মীভূত হয়। লাল চিং, সাদা চিং, মৈত্রী বিহার, প্রাচীন তালপাতার পুঁথি এবং বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে নির্মিত ‘ভুবন শান্তি ১০০ ফুট সিংহশয্যা গৌতম বুদ্ধের মূর্তিটি ছিল দেশের এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় শায়িত বৌদ্ধমূর্তির নির্মাণ শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালের ১ অক্টোবর, উচ্চতায় ছিল ৪০ ফুট। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি উদ্বোধনের দিনক্ষণও ঠিক করা হয়েছিল; কিন্তু এর আগেই সাম্প্রদায়িক হিংসার অনলে দগ্ধ হয় এই বৌদ্ধমূর্তিও।
বক্তারা রামু ট্রাজেডির সুষ্ঠু বিচার দাবি জানিয়েছেন।