পর্ব-২
হৃদরোগ হলেই একটা সময় ছিল যখন বৃহত্তর সিলেটের মানুষ ঢাকামুখি হতে হতো। ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ছাড়া বিকল্প কোন পথ ছিল না সিলেটের হৃদরোগীদের জন্য। সার্জারি থেকে শুরু করে ছোট বড় সকল চিকিৎসা নিতে ঢাকায় শুটতে হতো সবসময়। ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সিলেটে নিয়মিত পদচারণায় এখন অনেকেই সিলেটে হৃদরোগের চিকিৎসা পাচ্ছেন। দিনদিন হৃদরোগের আক্রান্তদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় ওসমানি হাসপাতালের ওপর চাপ বাড়ছে। সঠিক ও উন্নত চিকিৎসা পাওয়া যখন অনেক রোগীর কাছে স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিলেটের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চিকিৎসা সেবা আলো ছড়াচ্ছে দিনেদিনে।
ওসমানী হাসপাতালের পরই হৃদরোগীদের দ্বিতীয় ভরসাস্থল ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন। এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার প্রয়াত ডা. এম এ মালিকের চেষ্টায়।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আমিনুর রহমান লস্কর জানান, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এই বিশেষায়িত হাসপাতালটিতে ঢাকা হার্ট ফাউন্ডেশনের বিশেষজ্ঞরা এসে চিকিৎসা দেন।
এ পর্যন্ত হাসপাতালটি সফলভাবে ১৯২টি ওপেন হার্ট সার্জারি সম্পন্ন হয়েছে।
বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে এখানে হৃদরোগীদের বিনা মূল্যে সেবা ও পরামর্শ দেয়া হবে।
ইসিজির জন্য ও কোনো মূল্য নেয়া হবেনা। অন্যদিকে প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে কার্ডিওলজি বিভাগ থাকলেও সেখানের চিকিৎসা সেবা নেয়ার সামর্থ্য সাধারণের নেই।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে এর অফিস সূত্র জানায়, ২০২১ সাল থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা বহিঃবিভাগে রোগীর সংখ্যা ৭৪ হাজার ৮৭২ জন। সেই হিসেবে প্রতি বছর ১৪ হাজার ৯৭৪ জন রোগী সেবা গ্রহণ করছেন এবং প্রতিদিন গড়ে ৪১ জন রোগী সেবা নিচ্ছেন। এছাড়াও অন্যান্য সেবার মধ্যে ইসিজি করা হয়েছে ৫৮ হাজার ৬৫৩ জন,ইকো করেছেন ২১ হাজার ২৯০ জন,ইটিটি করেছেন ৩ হাজার ৫৩ জন, এক্সরে করেছেন ১৮ হাজার ৮৩০জন, আল্ট্রাসনোগ্রাফি করেছেন ২ হাজার ৩৬৮ জন, হল্টার করেছেন ১৫ জন, টিইই করেছেন ৫১ জন। ২০২১ সাল থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা অন্তঃবিভাগে মোট রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৩৮ জন। যেখানে সিসিইউতে সেই হিসেবে প্রতি বছরে ২ হাজার ৮০৭ জন রোগী সেবা গ্রহণ করছেন এবং প্রতিদিন গড়ে ৮ জন রোগী সেবা নিয়েছেন।
ক্যাথল্যাব বিভাগের অধীনে গত ৫ বছরে সেবা গ্রহণকারী রোগীর সংখ্যা- সিএজি করিয়েছেন ৪ হাজার ৮৯৩ জন, পিটিসিএ করিয়েছেন ১ হাজার ১১১জন , পিপিএম করিয়েছেন ১৮৪ জন, টিপিএম করিয়েছেন ১৮৯ জন, পিএজি করিয়েছেন ৩১জন, পি-পিসিআই করিয়েছেন ১২ জন এবং কার্ডিয়াক ক্যাথ করিয়েছেন ৯৬ জন। কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সাল থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মোট ১৮৬ জন রোগীর কার্ডিয়াক সার্জারি করা হয়।
২০২১ সালের শুরুতে ৩ জন দিয়ে শুরু করলেও ২০২৩ সালে ৪৭ জনের কার্ডিয়াক সার্জারি করা হয়। ২৪ ও ২৫ সালে সমান সংখ্যক ৪৩ জন রোগীর কার্ডিয়াক সার্জারি করা হয়। সেই হিসেবে প্রতি বছর ৩৮ রোগীর কার্ডিয়াক সার্জারি শুধুমাত্র এই হাসপাতালে।