বন্যায় সিলেটের পর্যটন শিল্পে ধস
ডেস্ক রিপোর্ট
2024-07-10
বন্যা যেন লন্ডভন্ড করে দিয়েছে সিলেটের পর্যটনকে। চলতি মৌসুমে তিন দফা ধাক্কা লেগেছে এই খাতে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৫শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে পর্যটন খাতের ক্ষতি। এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা কঠিন।
ব্যবসায়ীদের দাবি সবচেয়ে বেশি পর্যটক সমাগম ঘটে ঈদকে ঘিরে। কিন্তু সেই ঈদুল আজহার ভরা মৌসুমেও পর্যটকমুখর হয়নি ‘প্রকৃতিকন্যা সিলেট।
পর্যটনের ভরা মৌসুমে বাগড়া দিয়েছে বন্যা। ফলে ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দিতে হয়েছে পর্যটনকেন্দ্রগুলো। ফলে এখনো পর্যটকশূন্য সিলেট।
সিলেট হোটেল-মোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলায় পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল রয়েছে। যার বেশিরভাগ এখনো ফাঁকা। ঈদের দিন থেকে বন্যা শুরু হওয়ায় প্রশাসন পর্যটক কেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর থেকে দফায় দফায় বন্যার কারণে সিলেটমুখি হননি পর্যটকরা।
সিলেট হোটেল, মোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সুমাইয়াত নুরী জুয়েল বলেন, দফায় দফায় বন্যার কারণে পর্যটকরা সিলেটমুখি হননি। ঈদুল আজহার সময় তার হোটেলে কোনো গেস্ট আসেননি। হোটেলের রুম বুকিং ছিল একেবারে খালি। ঈদ মৌসুমে এ রকম অবস্থা আগে কখনো হয়নি।
তিনি বলেন, ঈদের বেশ ক’দিন চলে গেছে। বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে, এরপরও দেখা মিলছে না পর্যটকের। এভাবে চলতে থাকলে হোটেল-মোটেল ব্যবসা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হবে।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ড্রাষ্ট্রি সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, পর্যটনের সঙ্গে কেবল হোটেল নয়, অনেক বিষয় জড়িত- পরিবহন, রেস্টুরেন্ট, শপিং মল ও নৌকার বিষয়টিও জড়িত। অর্থাৎ পর্যটকরা যেদিকে যাবেন, সেদিকে আর্থিক বিষয় সম্পৃক্ত। পর্যটক না আসায় সব খাতেই এর প্রভাব পড়েছে ।
কোম্পানীগঞ্জ ট্যুরিস্ট ক্লাবের সভাপতি আবিদুর রহমান জানান, দফায় দফায় বন্যায় পর্যটন শিল্পের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এখন পানি নামতে শুরু করেছে। তবে পর্যটক আসা এখনো শুরু হয়নি। টানা এক মাস ধরে সাদাপাথর কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অন্যদিকে পর্যটনকেন্দ্র এশিয়ার অন্যতম জলাবন রাতারগুল। ভরা মৌসুম হলেও এখনো পর্যটকের আনাগোনা বাড়েনি। শুধু রাতারগুল নয় বন্যার কারণে পুরো পর্যটন খাতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
সিলেট ট্যুরিজম ক্লাবের সভাপতি হুমায়ুন কবীর লিটন বলেন, বন্যায় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর যাতায়াতের রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দ্রুততম সময়ে রাস্তাঘাট সংস্কার করে প্রয়োজন। না হয় অনেক পর্যটনকেন্দ্র পর্যটক হারাবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যার কারণে শিল্প বাণিজ্যের সব খাতে কোনো না কোনোভাবে ক্ষতি হয়েছে। এখন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পর্যটনসমৃদ্ধ উপজেলাগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে পর্যটন কেন্দ্রগুলো আবার মুখর হয়ে উঠবে।