বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার ৭নং সোনাকাটা ইউনিয়নের আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্বান্ত মানতে নারাজ বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ ও তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শামীম।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, কেন্দ্রে যে তিনজনের নামের তালিকা পাঠিয়েছে সেখানে নৌকা মার্কা থেকে নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান ও তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সুলতান ফরাজীর নাম দেয়া হয়েছে তিন নম্বরে।সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৩শে মে ৭নং সোনাকাটা ইউনিয়ন নির্বাচনে যিনি নৌকা মার্কার বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তার(মোঃ জলিল ফকির) নাম দেয়া হয়েছে তালিকার ১ নম্বরে যা কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রতি অনাস্থা দেখানোর সামিল।
নৌকা বিদ্রোহী মোঃ জলিল ফকিরের মনোনয়ন পাইয়ে দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে তদবির ও ফরম ক্রয়-জমা দেয়ার পুরো প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির উপ-মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শামীম। লোক মুখে প্রচারিত গোলাম কিবরিয়া শামীম অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়েছে।যুবলীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তি সহ সকল ক্ষেত্রেই যুবলীগের নির্দেশনা বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য কাজ করা যাবেনা,সেখানে গোলাম কিবরিয়া শামীম কিভাবে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী জলিল ফকিরের মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে তা হয়তো কেন্দ্রীয় যুবলীগ ভেবে দেখবে।ইতিমধ্যে ৭নং সোনাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্মীবৃন্দ বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান বরাবরে গোলাম কিবরিয়া শামীম এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন পাঠিয়েছে।
নৌকা মার্কার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মোটর সাইকেল মার্কা নিয়ে জলিল ফকির ভোট পেয়েছিলো ১৩ টি। এ বিষয়ে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন- জলিল ফকিরের নাম তৃণমূল থেকে পাঠানো হয়েছে তাই আমরা সুপারিশ করে পাঠিয়েছি।কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সর্বশেষ মিটিংয়ের সিদ্ধান্তের উদৃতি দিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্রোহীদের বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্তের পর আপনারা তার নাম ১ নং এ দিয়ে কেন্দ্রে কিভাবে পাঠালেন ? তখন ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উত্তেজিত হয়ে যান এবং বলেন- আমরা পাঠিয়েছি কেন্দ্র দিলে দিবে না দিলে দিবে না।
বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবিরকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন তৃণমূল পাঠিয়েছে তাই আমরা কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। নেত্রীর সিদ্বান্ত অবগত করে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি অস্বীকার করে বলেন যে , জলিল ফকির বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন না।পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ২৩ মে জলিল ফকিরের মোটর সাইকেল মার্কার ১৩ ভোট প্রাপ্তির কথা বলা হলে তিনি বিব্রত ও উত্তেজিত হয়ে বলেন ১৩ ভোট নিয়ে আপনারা খেয়ে ফেলেন। তৌফিকুজ্জামান তনু নিজেও একটি ইউনিয়ন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ যখন বিদ্রোহীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে ঠিক তার দুইদিন পরই এভাবে বিদ্রোহী প্রার্থীর নাম ১ নং এ দিয়ে কেন্দ্রে তালিকা প্রেরণ শেখ হাসিনার ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার সামিল নয় কি ? এটা পানির মতো পরিষ্কার যে, তাহারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত মানেন না বলেই এভাবে নাম পাঠিয়েছেন ও যুবলীগের গোলাম কিবরিয়া শামীম মনোনয়ন নিশ্চিতের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।স্থানীয় নির্বাচনে তালিকা প্রেরণে এসব অবৈধ প্রক্রিয়া মনোনয়ন বোর্ডকে ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা ও দুঃসাহস।
তৃনমূলের দোহাই দিয়ে নৌকা বিদ্রোহী প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ তৃণমূলের দোহাই দিয়ে সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করেছে। তালতলী উপজেলার ইউনিয়নগুলোর তালিকা প্রেরনে এরকম কম-বেশি অনিয়ম অনেক। অত্র এলাকার অনেক প্রার্থী তালিকায় নাম ভালো জায়গায় রাখতে ইতিমধ্যেই কোটি টাকা খরচ করেছে বলে এলাকার মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত।
এই তালিকা প্রেরণের সাথে যারা জড়িত কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ তাদের বিষয়ে কি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় তা সারা দেশের আওয়ামীলীগের জন্য একটি বার্তা বহন করবে।