মিয়ানমার থেকে ৯০০ সন্দেহভাজন কুকি সন্ত্রাসীর সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের পর, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং সাংবাদিকদের বলেন, সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে তথ্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে।
২০২৩ সালের মে থেকে মণিপুরে অর্থনৈতিক সুবিধা ও কোটা নিয়ে বিরোধের জেরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি এবং সংখ্যালঘু কুকি সম্প্রদায় সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছে।
কুলদীপ সিং বলেন, ‘সীমান্ত পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে এবং চিরুনি অভিযান চলছে।’ কুকি উপজাতিদের আবাসস্থল পার্বত্য জেলাগুলোকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দক্ষিণ মণিপুরে বসবাসকারী কুকিদের মিয়ানমারের চিন উপজাতির সঙ্গে জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে।
সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্যে বলা হয়, ড্রোনের মাধ্যমে বিস্ফোরক সরবরাহ করে ঘটানো হামলাগুলো কুকি সন্ত্রাসীরা পরিচালনা করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন কর্মকর্তারা। তবে কুকি প্রতিনিধিরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের সম্প্রদায়ের কেউ এই হামলা চালায়নি।
এদিকে, হামলার প্রতিক্রিয়ায় কুকি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ইম্ফলে বিশাল সমাবেশ করেছে মেইতি বিক্ষোভকারীরা।
অস্থিরতা প্রশমিত করার প্রচেষ্টার মধ্যেও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ সহিংসতার কারণে চলতি মাসের শুরুতে ১১ জন নিহত হয়েছেন। গত বছরের মে থেকে মণিপুরে সংঘাতে অন্তত ২৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এসময় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। মণিপুরে ৩২ লাখ মানুষের বসবাস।
মণিপুরে এই সহিংসতার জন্য ক্ষমতাসীন বারবার মিয়ানমারে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পরে ভারতে আসা উদ্বাস্তুদেরকে দায়ী করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। গত বছর সরকার এক হাজার ৬৫০ কিলোমিটার (১০০০ মাইল) ছিদ্রযুক্ত সীমান্ত বরাবর ভিসা ছাড়া স্বাধীনভাবে চলাচলের অনুমতি বিষয়ক একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতি প্রত্যাহার করে সেখানে ৩১০ বিলিয়ন রুপি ব্যয়ে একটি সীমান্ত বেড়া নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
সীমান্তের ওপারের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় কুকি গোষ্ঠীগুলো সরকারের এই পদক্ষেপগুলোর সমালোচনা করেছে।