সিলেট বিভাগ ক্রীড়া ক্ষেত্রে সব সময় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অবদান রাখছেন। অলক কাপালী ,রাজিন সালেহ , তাপস বৈশ্যর দেখানো পথে এগিয়েছেন সিলেটের আরো অনেক তারকারা। বর্তমানেও জাতীয় দল ও বয়স বিত্তিক দলে সিলেট বিভাগের একাধিক খেলোয়াড়রা তাদের নৈপুণ্যের আলো ছড়াচ্ছেন সব জায়গায়। কিন্তু দেশের সব স্থানে আলো ছড়ালেও অন্ধকারের দিকে হাটছে সিলেটের ক্রীড়াঙ্গন । এগিয়ে থাকা সিলেটের ক্রীড়াঙ্গন যেন অন্য বিভাগ থেকে পিছিয়ে পড়ছে।
সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি বিলুপ্তির দীর্ঘ ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন কমিটি গঠিত হয়নি। এর ফলে সিলেট বিভাগের ক্রীড়া কার্যক্রম অন্যান্য বিভাগ থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়ছে। গেল ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর ২১ আগস্ট দেশের ক্রীড়াঙ্গনের বিভাগীয় , জেলা উপজেলার সকল কমিটি বিলুপÍ করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়। নতুন করে প্রতিটি বিলুপ্ত কমিটিতে এ্যাডহক কমিটি গঠনে নির্দেশ দেয়া হয় সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু কমিটির বিলুপ্তির ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অদৃশ্য কারনে কমিটি গঠন করতে পারেনি সিলেট বিভাগের দায়িত্বশীলরা। যদিও অন্যান্য অনেক বিভাগ ও জেলার এ্যাডহক কমিটি ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গত ২১ আগস্ট যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব এস এম হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে স্মারক নম্বর নং- ৩৪.০০.০০০০.০৭১.৯৯.০৫৬.২৪.১৭৬ ্এর মাধ্যমে সমস্য সমূহের কার্যক্রম সত্রিয় সচল ও নির্বিঘ্ন রাখার প্রয়োজনে দেশের সকল বিভাগীয় , জেলা , উপজেলা সমূহের ক্রীড়া কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। স্থানীয় প্রেক্ষাপটে সর্বজন গ্রহণযোগ্য ক্রীড়া অনুরাগী , ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট সম্পৃক্ত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ের ক্ষেত্রে এডহোক কমিটি গঠন করে তার অনুমোদনের নিমিত্তে ক্রীড়া পরিষদে প্রেরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
পরবর্তীতে জানুয়ারীর ৫ তারিখ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আরেকটি প্রজ্ঞাপন (স্মারক নম্বর ৩৪-০৩.০০০০.০০৪.০৫.০২৪.২৪-৪০) প্রেরণ করা হয় বিভাগীয় কমিশনার সিলেট কে। যেখানে ১১ সদস্য বিশিষ্ঠ্য একটি কমিটি গঠন করার জন্য আহবান জানানো হয়। কিন্তু সময় গড়িয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন কমিটি গঠন করতে পারেনি বিভাগীয় ক্রীড়ার দায়িত্বশীলরা ।
এ বিষযে জানতে যোগাযোগ করা হলে বিভাগীয় কমিশনানের একান্ত সচিব ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার গালিব চৌধুরী বলেন, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ,সিলেটের সাধারণ শাখা -১ থেকে গত ৪ মে, খান মো. রেজা-উন - নবী বিভাগীয় কমিশনার সিলেট, স্বাক্ষরিত স্মারক নম্বর : ০৫.৪৬.০০০০.০০০.০০৫.১৮.০০০১.২৫.১৫২ এর মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক প্রেরিত রুপরেখা অনুযায়ী বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা সিলেট এর এ্যাডহক কমিটির প্রস্তাব সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সচিব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, ক্রীড়া অধিশাখা, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয় বরাবর প্রেরণ করা হয়েেেছ।
বিএনপির জেলা সভাপতি ও ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক পরিচালক এমএ কাইয়ূম বলেন, কমিটি না থাকলে কিছুটা অসুবিধাতো হয় যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে। সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান থাকতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, সিলেট বরাবরই সকল ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার । ক্রীড়া ক্ষেত্রে তার পরিমান অনেক বেশি । অবিলম্বে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠন করে সিলেটের ক্রীড়াঙ্গন কে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। তাই যোগ্য ব্যাক্তিদের দ্বার কমিটি গঠন করে ক্রীড়াঙ্গনের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
আলী ওয়াসিকুজ্জামান চৌধুরী অনি বলেন, কমিটি না থাকার কারনে আমরা কোন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা। বর্তামানে সিলেট বিভাগের সকল কার্যক্রম ক্রিকেট বোর্ড সরাসরী তদারকি কর্ েতাই অনেক ক্ষেত্রে তাদের ওপর নির্ভর করতে হয়। স্থানীয় কোন কার্যক্রমও করা যাচ্ছে না। তাই যত তাড়াতাড়ি কমিটি গঠন হবে সিলেটের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য তা মঙ্গল বয়ে আনবে।
ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ বলেন, যতদ্রুত সম্ভব যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে দেয়া উচিৎ । কেননা কমিটি ছাড়া তো কোন আয়োজন বাস্তবায়ন সম্ভব না। কমিঠি গঠন হলে সবার অংশগ্রহন নিশ্চিত হবে।
উল্লেখ্য যে, বিগত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থাণে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে ২১ আগস্ট ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের এক প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে দেশের সকল বিভাগ ,জেলা ও উপজেলার পুরুষ ও মহিলা কমিটি বিলুপ্ত করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।