কাকে? আলো আসবেই গ্রুপের কেউ নয় তো! নাকি জুলাই বিপ্লবে চুপ ছিলেন, তেমন কেউ? হতে পারে অভিনেত্রীর সঙ্গে প্রফেশনাল জেলাসি বা বিরোধ আছে এমন কোনও সহকর্মী। নাকি কোনও নির্মাতাকে বয়কটের ডাক দিলেন প্রায় প্রচারবিমুখ তাসনুভা তিশা।
এমন অনেক প্রশ্ন উত্থাপন হবে শিরোনাম থেকে। তবে যারা বুধবার (২০ নভেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে তাসনুভা তিশার হতবিহ্বল মুখ, চোখ আর আবেদন দেখেছেন ফেসবুক লাইভে, তারা নিশ্চিত বিচলিত হয়েছেন। নিশ্চিত সমর্থন জানিয়েছেন অভিনেত্রীর এই দুঃসহরাতে। যদিও তিশা নিজেই তার লাইভের নিচে জমা হওয়া কিছু নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পড়েছেন, যেখানে অনেকেই বলতে চাইছেন- ‘এগুলো সব ভাইরাল হওয়ার নাটক’!
অভিনেত্রী জানালেন, সম্প্রতি এক যুবক তার শুটিংয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে এসে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে সেটি অন্তর্জালে ছেড়ে দিয়েছে। যা রীতিমতো ভাইরাল।
‘কাউসারস কিংডম’ নামের একটি ফেসবুক পেজ এবং ওই পেজ অপারেটরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী। লাইভে আসার কিছু আগে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ওই যুবকের ছবি ও পেজের স্ক্রিনশট পোস্ট করে তার পরিচয় জানতে চান সবার কাছে।
লাইভে এসে শুরুতেই নিজেকে কনট্রোল করেন ক্ষুব্ধ তিশা। বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে এক ব্যক্তির ছবি দিয়ে একটি পোস্ট করেছি। তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। চার-পাঁচ দিন আগে নবাবগঞ্জে আমাদের শুটিং ছিল। বাপ্পি খানের পরিচালনায় একটি নাটক করছিলাম। সেখানে অনেক সাংবাদিক এসেছিলেন। আমার ও আমার সহশিল্পী আরশ খানের সাক্ষাৎকার নেন। সেখানে উনি ছিলেন। আমি ভেবেছিলাম তিনি সাংবাদিক। কিন্তু এই লোক সাংবাদিক তো দূরের কথা, তিনি আদৌ মানুষ কিনা, আমার সন্দেহ। কারণ তিনি লুকিয়ে বিভিন্ন অভিনেত্রীদের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন, যেটা আমারও করেছেন। সেটির ভিউ ২ দশমিক ১ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে গেছে এবং নামানো সত্ত্বেও অনেকের কাছে আছে।’
আউটডোর শুটিংয়ে গিয়ে নিজেদের অসহায়ত্ব আর অভিযুক্ত যুবকের গোপনে ভিডিও ধারণ করার বিষয়টিও বর্ণনা করেন অভিনেত্রী, ‘‘আউটডোর শুটিংয়ে আমরা যারা অভিনেতা-অভিনেত্রী, আমাদের লেপেল পরার আলাদা কোনও জায়গা থাকে না। নিজেদের মতো করে পরতে হয়। আমি খোলা মাঠে শুটিং করছিলাম। সামনে সাংবাদিকরা ছিলেন। ভেবেছিলাম, সাংবাদিক ভাইয়েরা কখনও এমন কাজ করবেন না। তাই আমার মতো করে লেপেল পরছিলাম এবং ঠিক করছিলাম। সেই ভিডিও সে ধারণ করে গোপনে। ‘কাউসার কিংডম’ নামের এক পেজে সেটি আপলোড করে।’’
এমন ঘটনাকে বিবেকহীন ও শিক্ষার অভাব বলে অবিহিত করে তিশা বলেন, ‘কতটা বিবেকহীন ও শিক্ষার অভাব হলে মানুষ এ ধরনের কাজ করে! এ ধরনের কিছু ব্যক্তি আছেন যারা নিজেদের সাংবাদিক বলে দাবি করেন, কিন্তু তারা আসলে সাংবাদিক নয়। একজন অভিনেত্রী হিসেবে আমি এই লোকের বিরুদ্ধে অবশ্যই অ্যাকশন নেব। তিনি কোনও শুটিং স্পটের আশেপাশে যেন কখনও না আসেন। তাকে বয়কট করা উচিত।’
তিশা অন্য শিল্পীদেরও মনে করিয়ে দেন অভিযুক্ত যুবকের বিষয়ে। জানান, ওই যুবকের পেজে আরও অভিনেত্রীদের ভিডিও আছে। তিনি বলেন, ‘তার পেজে শুধু আমি না, আরও অনেক অভিনেত্রীর ভিডিও আছে যেগুলো তিনি লুকিয়ে ধারণ করেছেন। লুকিয়ে ধারণ করে আপত্তিকর ভিডিও পেজে পোস্ট করেন। সেখানে সারিকা সাবাহ আপু, অর্চিতা স্পর্শিয়া, তানিয়া বৃষ্টি, কুসুম শিকদার আপুর ভিডিও দেখেছি।’
অভিযুক্ত যুবকের নাম উল্লেখ করে তাসনুভা তিশা সচেতন করেন আসল সাংবাদিকদেরও। বলেন, ‘কাউসার নামের এই লোক নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে হয়তো সবার মাঝে যান, গিয়ে এ সমস্ত কার্যকলাপ করেন। আমি সাংবাদিক ভাইদের উদ্দেশে বলবো, আপনাদের নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে করণীয় কিছু আছে। আমার কলাকুশলী, যারা আছেন, অভিনেত্রী-অভিনেতারা, যাদের নাম মেনশন করলাম, আপনারা এই বিষয়ে পরামর্শ দিন, জানাবেন কি করা উচিত?’
শেষে অভিনেত্রী বলেন, ‘এই লোকের বিরুদ্ধে আমি অ্যাকশন নিতে চাই। সে যেন সাংবাদিকতা তো দূরের কথা, কোনও শুটিং স্পট, কোনও অনুষ্ঠান, মিডিয়ার অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আশেপাশে যেন না আসতে পারে। তাকে বয়কট করা হোক।’
বলা দরকার, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অভিযুক্ত কাউসার আগে চ্যানেল আইতে কাজ করলেও এখন সেখানে নেই।